বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপ চ্যানেলে এক জালে প্রায় ১২০টি (১৫ মণ) লাল কোরাল মাছ ধরা পড়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের মালিকানাধীন এফবি রহমান নামের ট্রলারে মাছগুলো ধরা পড়ে।
একেকটি মাছের ওজন সাড়ে ৪-৬ কেজি পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে ট্রলারটি শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ফিশারিজ ঘাটে পৌঁছালে স্থানীয় উৎসুক জনতা মাছগুলো দেখতে ভিড় জমান। এরই মধ্যে মাছগুলো ৩ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ফিশিং ট্রলারের মালিক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ট্রলারটি গত বুধবার (২১ এপ্রিল) দুপুরের দিকে শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ফিশারিজ ঘাট থেকে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। মোহাম্মদ আলী মাঝির নেতৃত্বে নয় মাঝিমাল্লা ছিলেন ট্রলারটিতে। মৌলভীর শীল এলাকায় সেন্টমার্টিন চ্যানেলে ট্রলারটি নোঙর করে জেলেরা জাল ফেলেন। দুপুরে জাল টানা শুরু করেন তারা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে জাল টেনে উঠিয়ে তারা ১২০টি লাল কোরাল পান। পরে মাছগুলো ফিশারিজ ঘাটে নিয়ে এলে ২০ হাজার টাকা মণ দরে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, লাল কোরালগুলো স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ লালু তিন লাখ টাকায় কিনেছেন। তবে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হয়ে থাকে ৫০০-৬০০ টাকায়। এখন মাছগুলো বরফ দিয়ে প্যাকেট করে উপযুক্ত দাম পাওয়ার জন্য চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করা হবে।
একসঙ্গে এতগুলো বড় মাছ পেয়ে আনন্দিত ফিশিং ট্রলারের মোহাম্মদ আলী মাঝি বলেন, ৫ জন জেলে জাল তুলতে গিয়ে তা অনেক ভারী বুঝতে পারেন। পরে ট্রলারে থাকা ৯ জেলের সবাই মিলে জাল টেনে তোলেন। এরপর হিসাব করে দেখা যায়, ১২০টি লাল কোরাল এবং আরও ২৫-৩০ কেজি অন্য প্রজাতির মাছ ধরা পড়েছে। প্রতিটি লাল কোরাল মাছের ওজন সাড়ে ৪-৬ কেজি, একত্রে ওজন প্রায় ১৫ মণ। অন্য প্রজাতির মাছগুলো ট্রলারের মালিক ও জেলেরা ভাগ করে নিলেও লাল কোরালগুলো বিক্রি করা হয়।
শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আয়ুব বলেন, লাল কোরাল গভীর সমুদ্রের মাছ। অন্য জেলেরাও লাল কোরাল মাছ ধরতে সেন্টমার্টিন চ্যানেলে জাল ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ওই এলাকায় কয়েকদিন ধরে ভালোই মাছ ধরা পড়ছে।
টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, সুস্বাদু কোরাল মাছের কদর দেশজুড়ে। কোরাল সব সময় হাট-বাজারে পাওয়া যায় না। এজন্য এই মাছের দাম কিছুটা বেশি। লাল কোরাল সাধারণত ১-৯ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই মাছ উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চল, বিশেষত পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেখা যায়। এছাড়া এশিয়ার উত্তরাঞ্চল, কুইন্সল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্ব আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলেও এগুলো পাওয়া যায়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।